আগামীকাল শনিবার ২৮ অক্টোবর সমাবেশ করার জন্য অনুমতি চেয়ে বিএনপি তাদের নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে এবং আওয়ামী লীগ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেট এলাকার জন্য ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে চিঠি দিয়েছে। ওই চিঠির জবাবে ডিএমপির পক্ষ থেকে দুই দলকে রাস্তায় সমাবেশ না করে উন্মুক্ত জায়গায় বা খোলা মাঠে বিকল্প ভেন্যু করার জন্য চিঠি দেয়।
কিন্তু বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে জানানো হয়, যেহেতু তাদের কাক্সিক্ষত জায়গায় সমাবেশের আয়োজনের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে, তাই অন্য কোনো ভেন্যুতে যাওয়া সম্ভব হবে না। এ কারণে পুলিশ এখনো তাদের কাউকে সুনির্দিষ্ট করে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি। এদিকে নয়াপল্টনের আশপাশ এলাকার বসবাসরত মানুষের মনে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে নয়াপল্টনের এক বাসিন্দা আতিকুর রহমান বলেন, বাসা থেকে বের হতে গেলে তারা চিন্তা করছেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে শুনছেন বিএনপি এখানে বসে পড়বে। আওয়ামী লীগও সেদিন সমাবেশ করবে। এ কারণে পুলিশ তাদের এই এলাকার বাসাবাড়ি ও হোটেলগুলোতে চিরুনি অভিযান করছে। সাধারণ মানুষ খুব ভয় পাচ্ছে।
গুরুত্বপূর্ণ কাজ থাকায় মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসতে চেয়েছিলেন ফিরোজ মিয়া। কিন্তু ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও আওয়ামী লীগের সমাবেশের কারণে তিনি ঢাকায় আসা পিছিয়ে দিয়েছেন। তিনি জানান, ঢাকায় গিয়ে পুলিশি হয়রানিতে পড়তে চান না। এ ছাড়া ওই সময় কী ঘটে তাও এখন বোঝা মুশকিল। তাই কাজগুলো জরুরি সত্ত্বেও তিনি তা পিছিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে ঢাকায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুধু ফিরোজ মিয়া নন, তার মতো অনেকের বিশেষ করে ঢাকায় বসবাসরত মানুষের মনে গ্রেপ্তার বা আটক আতঙ্কে ভুগছেন। অভিযোগ রয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন জায়গা থেকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আর সেখানে অনেক সাধারণ মানুষও হয়রানির শিকার হচ্ছে।
জানা গেছে, ঢাকার প্রবেশপথগুলো চেকপোস্ট বসিয়ে ব্যাপক তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে তারা বলছে, তারা ওয়ারেন্টের, এফআইআর তালিকাভুক্ত, তদন্তে প্রাপ্ত, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও সন্দেহভাজন আসামিদের গ্রেপ্তার করছেন। কোনো রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাউকে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। বিএনপির দাবি, সমাবেশ কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে সারা দেশ থেকে হাজারের কাছাকাছি তাদের নেতাকর্মী গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে বিএনপির গ্রেপ্তার অভিযোগের বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান বলেন, রাজনৈতিকভাবে কেউ আটক বা গ্রেপ্তার হচ্ছে না। যারা গ্রেপ্তার হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট বা মামলা রয়েছে। বিএনপি যে অভিযোগ করেছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
এদিকে গতকাল সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাহাঙ্গীরনগর ও আমিনবাজার এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতিতে ঢাকাগামী বিভিন্ন যানবাহন থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও তার ব্যাগসহ অন্যান্য জিনিসপত্র তল্লাশি করা হয়।